বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
কালীগঞ্জে সামাজিক কোন্দলের জেরে সংঘর্ষে ছোট ভাইয়ের পর বড় ভাইয়ের মৃত্যু  ঝিনাইদহে অনলাইন জুয়া সাইটের বাংলাদেশী এজেন্ট গ্রেফতার সিলেটে চোরাই চিনি কান্ডে আটককৃতরা জামিনে বের হয়ে এখন আরো বেপরোয়া  পাইকগাছার ঘোষখালী নদীর কচুরিপানা অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন  কালীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১ জন নিহত, আহত ৪ কালীগঞ্জে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন লিবিয়া থেকে ইতালি পাঠানোর নামে যুবককে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নলডাঙ্গা রাজবাটী এন্ড রিসোর্টের সামনে যুবককে কুপিয়ে জখম  কালীগঞ্জে দুই মাস ধরে নিখোঁজ দুই সন্তানের জননী: হত্যা ও গুমের আশঙ্কায় দিশেহারা পরিবার কালীগঞ্জে জমি-জমা বিরোধের জেরে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা

কালীগঞ্জে দুই মাস ধরে নিখোঁজ দুই সন্তানের জননী: হত্যা ও গুমের আশঙ্কায় দিশেহারা পরিবার

/ ১৮৭ বার পঠিত
আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন

 

সাংবাদিক সোহেল রানা, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:

বাড়ি থেকে বের হয়ে দু’মাস পেরিয়ে গেলেও আজো ফিরে আসেনি ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের দুই সন্তানের জননী রিনা পারভীন (৩৭) নামের এক গৃহবধু। শহরের থানা রোডের ত্রি স্টার হোটেলের মালিক সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী রিনা পারভীন গত ১১ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ রয়েছে। এ মর্মে পরের দিন তিনি কালীগঞ্জ থানাতে একটি সাধারণ ডায়েরি করলেও অদ্যবধি পুলিশও তার হদিস মেলাতে পারিনি। পরিবারের ক্ষোভ পুলিশের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রানা প্রতাপের ঢিলেমির কারণে তারা প্রতিকার পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় গৃহবধু রিনা অপহরণ, গুম না হত্যার শিকার হতে পারে এ আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবার। এ নিয়ে সন্তান স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম।

 

 

থানায় লিখিত এজাহার ও নিখোঁজ রিনা পারভীনের স্বামী সাজ্জাদ হোসেন জানায, গত ১১ই এপ্রিল সকাল ১০ টার দিকে তার স্ত্রী কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সারাদিন পেরিয়ে গেলেও সে বাড়িতে ফিরে না আসালে সন্ধ্যার পর স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে কল দিলে বন্ধ পায়। রাতে ও পরদিন নিকট আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান না মেলায় উগিদ্ব হয়ে পড়ে। পরে রাতেই তার স্বামী সাজ্জাদ হোসেন কালীগঞ্জ থানাতে একটি এজাহার দায়ের করেন। সাজ্জাত জানান, পুলিশ তার স্ত্রীর মোবাইল ট্র্যাকিং করে গত ১৩ই এপ্রিল পাবনা ও ২৩ এপ্রিল বরিশালের পিরোজপুরে কিছু সময়ের জন্য মোবাইল অন পেয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই রানা প্রতাপের অসহযোগিতার কারনে আজো তার সন্ধান বা উদ্ধার হয়নি।

 

সাজ্জাদ হোসেন আরো জানায়, তার স্ত্রী রিনা ১১ এপিল বাড়ী থেকে বের হয়েছে। কিন্তু তার ১০ দিন আগে ১লা এপ্রিল কুষ্টিয়া মিরপুর থানায় ১নং চিলশিয়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার নুরুল আমিন খান স্বাক্ষরিত একটি তালাকনামার কপি গত ১২ই মে ডাকযোগে তার হাতে আসে। সেটির সত্যতা জানতে তিনি ওই রেজিষ্টারের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এবং তালাক নামাতে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের দু’জন স্বাক্ষীর বিষয়ে খোজ নিয়ে তাদেরও কোন হদিস পাননি। তার ধারনা তালাকের ঘটনাটি প্রতারক চক্রের সাজানো নাটক হতে পারে। তবে, তালাকনামার বিষয়টির সত্যতা জানতে নিকাহ রেজিষ্টার নুরুল আমিন খানের মুঠোফোনে মঙ্গলবার রাত নয়টায় দিকে কয়েকবার কল দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

 

পৌর এলাকার চাপালী খানা গ্রামের পাড়ার বাসিন্দা স্বামী সাজ্জাত হোসেন আরো জানায়, ছোয়াদ ইসলাম (২২) ও মোছাঃ জারিন (১৪) নামে তাদের দুটি সন্তান আছে। তালাক বা সংসার করবে না এমন কোন বিষয় থাকলে স্ত্রী সন্তানদের কাছে অবশ্যই বলত। সাজ্জাত আরো বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের টুটুল হোসেন নামে এক যুবক তার স্ত্রীকে প্রায়ই মোবাইলে ডিস্টাব করতে। পরে সেখানেও খোজ নিয়ে স্ত্রীর কোন সন্ধান পাননি তারা।

 

পরিবার ও সাজ্জাদ হোসেনের ভাষ্য, তার স্ত্রী রিনা কোন সঙ্গবদ্ধ প্রতারক চক্র বা অপহরণকারীদের খপ্পরে পড়তে পারে। কারন তার স্ত্রীর কাছেই সাত ভরির মত সোনার গহনা ও প্রায় লক্ষাধিক টাকা ছিল। হয়ত এসব হাতিয়ে নেবার উদ্দেশ্যেই কোন চক্র তাকে ফুসলিয়ে অপহরণ পূর্বক গুম করতে পারে বলে আশংকা করছে। থানাতে অভিযোগ দেবার পর প্রায় দু’মাস অতিবাহিত হলেও সন্ধান না পাওয়াতে তাদের শংকা বাড়ছেই। এ নিয়ে ছেলে মেয়ে ও পরিবারের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।

 

 

স্বামী সাজ্জাত হোসেনের দায়েরকৃত এজাহারের বিষয়ে থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রানা প্রতাপ বলেন, তিনি প্রথম দিকে মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে নিখোজ রিনা পারভীনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েছেন। গত দু’সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী স্বামীর কাছে একটি তালাকনামা পাঠিয়েছেন। নিখোজ মহিলা টি একজন এডাল বয়সের। যে কারনে তিনি তালাকনামাটি যাচাই বাছাই করার প্রয়োজন বোধ করেননি।  এবং অভিযোগের বিষয়ে আর এগোন নি বলে সাফ জানান তিনি।

 

 

তবে. গৃহবধু নিখোজ এজাহারটির তদন্ত কর্মকর্তার অসহযোগিার বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, আমি এখন একটি জরুরী মিটিংয়ে রয়েছি। অসহযোগিতার বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *