শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ০৬:০০ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
** বিএনপি’র নির্দেশ চাঁদাবাজদের ধরে ধরে পুলিশের হাতে দিন!
** রাজনৈতিক পট পরিবর্তনেও বদলায়নি সড়ক ও ফুটপাতে চাঁদাবাজিতে হাত বদল হয়েছে!
** ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কি লীজ দিয়েছেন গাড়ি, পার্কিং,পার্ক, ফুটপাত!
** ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ নাই, চাঁদাবাজদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি!
*মানুষের ইসমাইল হোসেন মোল্লা মতিঝিল থানাকে ম্যানেজ করে চলে!
*স্বৈরাচার সরকার পতনের পর মতিঝিল থানা রহস্যজনক!
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
গণঅভ্যুত্থানের মতো বিরাট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও বদলায়নি নগরীর সড়ক ও ফুটপাতে চাঁদাবাজির চিত্র। হিসাব করে দেখা গেছে, নগরীর ব্যস্ততম যোগাযোগ কেন্দ্রগুলোর অন্তত ৮০ ভাগ সড়ক দখলে থাকায় তীব্র যানজটসহ অচলাবস্থা তৈরি হয় পুরো নগরীতে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, শুধু মতিঝিলে বার্ষিক চাঁদাবাজির পরিমাণ অন্তত অর্ধশত কোটি টাকা। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পুরো নগরীতে এসব অবৈধ দখলদারিত্ব রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের সুযোগ তৈরি করছে।
রাজধানীর মতিঝিলের, দিনভর যেখানে চলে চাঁদা আদায়। রাজি না হলে পোহাতে হবে করুণ পরিণতি! সকালে থেকে মতিঝিলে মহোৎসব বেলা গড়াতেই যে বাজার দেখা যায় তার পেছনে অনেক হিসাব। আছে রাজনীতি, আছে ভয়। আছে ক্যামেরা দেখলে উচ্ছেদের অভিনয়। ইঁদুর বিড়ালের খেলা।
ইসমাইল হোসেন মোল্লা বিএনপি যুবদলের একজন বহিষ্কার কর্মী কিভাবে ফুটপাতে জায়গা দখল করে ভাড়া দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে চলছে, রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে মহা উৎসব দলের নজরদার আছে আছে কি না তা জনগণের প্রশ্ন?
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন ৫ আগস্টের পর থেকে রাজধানীর মতিঝিলে দোকানপাটের মাত্রা বেশিরভাগই বেড়ে গেছে সব রাজনৈতিক পরিচয় দোকান বসছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি আমাদের কিছু করার নেই আমরা যদি কিছু বলি তাহলে রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতারা আমাদেরকে ফোন দেয় যে আমাদের দলের লোক । এটা তো পার্মানেন্ট সলিউশন না।
মতিঝিল বিভিন্ন স্থানে মাদকের ব্যবসা চলছে সেটাও থেকে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
নগরীর প্রাণকেন্দ্রে, মতিঝিল যান চলাচলের জন্যই যে সড়ক, সেখানে যে বাসটিকে মনে হচ্ছে ভুলে বাজারে ঢুকে পড়া কোনো বাহন, সে চিত্র প্রতিদিনের।
দুপুর গড়ানোর পর এসব সড়কে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, একজনের হেটে যাওয়াই দায়। প্রতিদিন অফিস ধরার সময় থেকে অফিস ফেরা পর্যন্ত পুরো সময়টাতে মতিঝিলে এই অচলাবস্থার ভুক্তভোগী নয়?
কিন্তু কেন মতিঝিলে সবগুলো সড়ক দখলে? তার উত্তর পাওয়া যায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের এই হিসেবের দিকে তাকালে। আপাত দৃষ্টিতে, সরকারি জায়গা পেয়ে বসা পড়া সাড়ি সাড়ি চাঁদাবাজের দল মনে হলেও, বাস্তবে এখানে প্রতিটি জায়গা নির্ধারিত।
প্রতি ৫০ ইঞ্চি জায়গা মিলিয়ে একেকটি ভিটি, ভ্যান বা দোকান। ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত বছরে ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা এককালীন এবং প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০, ৫০০, টাকা পর্যন্ত তাদের খাজনা দিতে হয় ইসমাইল কে প্রতিটি ভিটি বাবদ।
ইত্তেফাক মোড় থেকে করা এই সড়কটুকুতেই এমন ভিটি আছে, হাজার হাজার যা থেকে প্রতি বছরে আয় প্রায় কোটি কোটি টাকা। সিটি করপোরেশনের এসব সড়ক, ফুটপাত দখল করে আসলে এমন কত ভিটি আছে এই মতিঝিলে তার কোনো হিসেব সংস্থাটির কাছে নাই।
তবে আমরা দেখেছি, সব মিলিয়ে এখানে এমন সব ভিটির সংখ্যা হিসাব নাই । এবং সরকারি সড়ক ব্যবহার করে এই মতিঝিলে থেকে এক দিনে চাঁদাবাজির পরিমন লক্ষ লক্ষ টাকা।
বছর শেষে এই মতিঝিলে থেকেই বিভিন্ন ভাবে চাঁদাবাজির পরিমাণ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে তো আওয়ামী লীগ নেই, তাহলে তাদের জায়গায় কারা?
ভয়ে সামনাসামনি সব ঠিকঠিক বললেও, গোপনে ভেসে আসে অনেক আক্ষেপ। একজন অভিযোগ করে বলেন, এরা ক্ষমতায় আসার আগেই এগুলো করছে, ক্ষমতায় আসলে এরা কী করবে? আমরা চিন্তিত।
পরিচয় গোপন করে, নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, আরও কিছু তথ্য। একজন বলেন এখানে কোনো কাস্টমার গ্যাঞ্জাম লাগালে, সমস্ত দোকানদার দৌঁড়িয়ে আসবে। অ্যাডভান্সের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন ৫০ হাজার টাকা অ্যাডভান্স। মাসে ভাড়া ১৫, ১২ হাজার টাকা।
অনুসন্ধানে আমরা দেখি, পুরো মতিঝিলকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিয়ন্ত্রণ করছে রাজনৈতিক বিভিন্ন পক্ষ। ইউনিট, বিএনপি ও যুবদলের পরিচয়ে নিয়ন্ত্রণ করে, চাঁদাবাজ ইসমাইল হোসেন মোল্লা বিএনপি’র থেকে বহিষ্কৃত নেতা ।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, স্থানীয় বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ সম্পর্কে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু বলেন পুলিশকেও কয়েকবার বলা হয়েছে ধরে ফেলুক। আমরা চাইনা কেউ সাধারণ মানুষের সাথে চাঁদাবাজি করুক।
যদিও সিটি করপোরেশন বলছে, বড় সমস্যা এসব হকারদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক ইন্ধনদাতারাই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী বলেন,এখানে যে পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্স পার্টি আছে, তারা হয়ত এখানে বসাচ্ছে। এখন আইন তো মান্য করার বিষয়। আইন প্রয়োগ করে কাউকে শোধরানোর তো সুযোগ নেই। তবে আমি বিশ্বাস করি এখানে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা থাকলে দলগুলোর নজরে বিষয়টা আনা উচিত।
এটা স্পষ্ট ইসমাইল হোসেন মোল্লা ফুটপাত দখল করে হকারদের এই ব্যবসা সেটা মোটেও সহজ সরল কোনো ব্যাপার নয় এবং এসব কাজের পেছনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের একধরনের প্রচ্ছন্ন আস্কারা থাকে সেটিও বলছেন সবাই। কিন্তু এখন বিরাট একটা গণঅভ্যুত্থানের পর পরিবর্তনের একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে এবং বলা হচ্ছে, এ সরকারের সেভাবে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, তাহলে এসব বন্ধ করতে সরকারের অনীহা কেন?
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানীর সড়ক আর ফুটপাতগুলো কালো টাকা উৎপাদনের একটি প্রচ্ছন্ন কারাখানা। যা এখনো রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের এই দুষ্টচক্রেই আবর্তিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন যে অর্থ তারা সংগ্রহ করেন সেটা যে একা ওই ব্যক্তি ভোগ করেন ব্যাপারটা কিন্তু ওরকম না। ওখানেও একটা সিন্ডিকেট আছে। ওটা অনুসরণ করে তাকে টাকা অনেকদূর পৌঁছে দিতে হয়। এ ধরনের অপরাধগুলো এক ধরনের রাজনৈতিক ক্ষমতা পুঁজি করে বা ব্যবহার করে দুর্বৃত্তায়ন, অস্থিরতা সৃষ্টি করা বা দখল করা, চাঁদাবাজি করা এ ধরনের ঘটনার নামন্তর।
তিনি বলেন, এখান থেকে যে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে সেগুলোর তো রাষ্ট্রীয় কোনো হিসাব নাই। রাজনৈতিক থেকে ব্যক্তি প্রয়োজন ও ইচ্ছায় যে যেভাবে খুশি এসব অর্থ ব্যবহার করছে। রাজনৈতিক দৃর্বত্তায়নের মাধ্যমে যদি এ অর্থ ব্যবহার হয় তাহলে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি থেকে শুরু করে নানা ধরনের অনিয়ম ও উছ্শৃঙ্খল আচরণ করা সম্ভব। এখান থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে সিটি করপোরেশনকেই জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। তার আইনে যা আছে সেটার প্রয়োগ ঘটানো। এবং এখানে আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনীর সোচ্চার ভূমিকা ব্যতীত এ অবস্থা থেকে কোনো মুক্তি মিলবে না।
প্রতিবেশী ভারতসহ অনেক দেশেই হকার বাজারের ব্যবস্থা আছে। যেখানে নির্ধারিত সরকারি ফি’য়ের বিনিময়ে হকাররা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সড়ক দখল করে ব্যবসার নামে চাঁদাবাজির সেই আগের ধারাই কি থাকবে, নাকি তা বন্ধ হবে নাকি ফি’ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকার হকারদের একটি বৈধ পুনর্বাসনের দিকে যাবেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
মতিঝিলের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা সহ জায়গা ক্রয়, বিক্রয় ,ভাড়া জবর দখল বন্ধ করতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
* মতিঝিলের ফুটপাতের, জায়গা জমি ক্রয় বিক্রয়ের ভাড়ার স্থান।
স্বৈরাচার সরকারের আমলের পর বিএনপি’র নেতার নাম বলে এবং বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে টাকা
তোলেন ইসমাইল হোসেন মোল্লা বটতলা, মতিঝিল, দিলকুশা, টাওয়ার,মতিঝিল পার্ক , গাড়ি পার্কিং,১৬ তলার গলি, বিমান গলি সহ মতিঝিলের আনাচে-কোনাচে গলির ভিতরে।
* বর্তমানে যুবলীগের বিএনপি’র কর্মীরা যারা মতিঝিলের জমি ক্রয় বিক্রয় ভাড়া দিয়ে মনিটরিং করেন তাদের নামের তালিকা:
বিল্লাল, কেরু বিল্লাল,হোসেন, মানিক,পলাশ, ওসমান, মাসুদ, রনি, ড্রাইভার কবির গাড়ি পার্কিং,রাসেল কাঁচ মাল,দারিওলা রাসেল,ফকিরাপুলের সোহেল,বড় মাইনুল,ছোটমাইনুল,ওসমান,পলাশ,মঞ্জু,আকবার,
কমলাপুরে রুবেল,কাইয়ুম,মহসিন,ফারুক,আলম,ছোট আলম।
এর পরবর্তীতে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন দূনীতির সংবাদে।